উত্তরের হিমেল হাওয়া : বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ, বিপাকে নিম্নবিত্তরা।

উত্তরের হিমেল হাওয়া : বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ, বিপাকে নিম্নবিত্তরা।

সাধন রায় লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ


উত্তরের হিমেল হাওয়া  বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ, বিপাকে নিম্নবিত্তরা।প্রতিদিন সকাল সকাল রোদের দেখা মিললেও বিকেল হতে না হতেই শুরু হচ্ছে শীতের আমেজ। উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে দিন দিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা।

হেমন্তের মাঝামাঝি সময়ে এসে সন্ধ্যা নামলেই জেলার মানুষকে ঠান্ডায় কাবু করছে উত্তরের হিমেল বাতাস। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত হালকা কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারদিক। তবে গত দুদিনে ঘন কুয়াশার চাদরে একেবারে ঢাকা পড়ে গেছে।

এতে রাত ৮টার থেকে ৯ টার মধ্যেই প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে শহরসহ জেলার অন্য বাজারগুলোও।শনিবার (১২ ডিসেম্বর ) সকাল নয়টায় লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

লালমনিরহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, গত ২০ দিন ধরে লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) লালমনিরহাটে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ডিগ্রী সেলসিয়াস।রাতে শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে কুয়াশা বেশি দেখা যাচ্ছে।

রাতের হিম বাতাসে কাবু হয়ে লেপ-কাঁথা জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে এই উত্তর জনপদের মানুষকে। ঠান্ডা বাতাসে কাবু হয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই ঘরে ফিরছেন সাধারণ মানুষ।

এদিকে দিনে রোদ আর রাতে শীতের কারণে কেউ কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন সর্দি-কাশিসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা এ ধরনের সমস্যায় বেশি পড়ছেন বলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।জেলা শহরের ভ্যান চালক মো. বজলার রহমান বুদু বলেন, ‘আমরা দিনে যখন ভ্যান নিয়ে বের হই, তখন পাতলা কাপড়চোপড় পরেই বের হই।

তবে গত দুইদিন ধরে সন্ধ্যা হতে না হতেই ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা জড়ো হয়ে আসছে। রাতে বেশিক্ষণ ভ্যান চালানো যাচ্ছে না। এছাড়া ঠান্ডা বেশি লাগায় রাতে শহরে লোকজন কম থাকে এতে আয়ও মোটামুটি কমেছে। 

অপরদিকে শীতের তীব্রতা থাকলেও শহরের পিঠার দোকান গুলোতে উপছে পড়া ভির লক্ষ্য করা গেছে। এমনিতে এই পিঠার দোকান গুলো সন্ধ্যার আগে খুললেও শীতের কারনে সকাল থেকেই এসব দোকানে বেচা কেনা চলছে।

তাই পিঠার ব্যবসা ভাল হওয়ায় বেশ খুশি তারা।লালমনিরহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যমতে বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের উত্তরাঞ্চলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এই অঞ্চলটি হিমালয়ের খুব কাছাকাছি হওয়ায় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে হিমেল বাতাস সরাসরি এখানে আসছে।

সাইপ্রাস থেকে আসা ঠান্ডা বাতাস হিমালয়ে ধাক্কা খেয়ে এই এলাকায় আসায় এখানে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। এই হিমেল বাতাস দিনের বেলায়ও থাকছে, তবে দিনে সূর্যের তাপ থাকায় তা অনুভূত হচ্ছে না। রাত গভীর হলেই তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে।এদিকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত ঠাণ্ডাজনিত রোগের কারণে শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী রোগীর ভর্তি বাড়ছে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে।

রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসকরা।হাসপাতালে এক শিশুকে নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসা সদর উপজেলার কুলাঘাট গ্রামের শ্রী রমেশ ডাউয়াই বলেন, প্রচণ্ড শীতের কারণে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

তবে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ।লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা.ইফাত মিলি জানান, কয়েকদিনের ঠান্ডা,গরম আর গত দুইদিনের তীব্র শীতে ঠাণ্ডাজনিত কারণে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে সদর হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ চিকৎসা দেয়া হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন